Visit Cox's Bazar - Saint Martin At Low Cost ।। A to Z Travel Guide of - Cox's Bazar And Saint Martin Trip 2021 ।। কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন - ভ্রমণ গাইড ।। ঘুরে আসুন স্বল্প খরচে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ভ্রমণের খুটিনাটি সব ২০২১
☆☆ভ্রমণ গাইড - কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন☆☆
Cox’s Bazar (কক্সবাজার) এর কথা আমরা সবাই শুনেছি । Internet এর এই দুনিয়াতে ভার্চুয়ালি Cox’s Bazar (কক্সবাজার) দেখে ফেলেছে অনেকে । হয়তো আবার মনের মধ্যে তীব্র আকাঙ্খা পুষে রেখেছেন পরবর্তী কোন এক ছুটিতে ছুটে চলে যাবেন পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে । যারা এরই মধ্যে Cox’s Bazar (কক্সবাজার) থেকে ঘুরে এসেছেন তারাও হয়ত সুযোগের সন্ধানে থাকেন আরেকবার ঘুরে আসার চেষ্টায় । কেননা ভ্রমণবিলাসী ও ভ্রমণপ্রেমীরা যেসব দর্শনীয় স্থানে বার বার যেতে চায় তার মধ্যে Cox’s Bazar (কক্সবাজার) অন্যতম । অবশ্য তার অনেক কারণও রয়েছে । সেটির কথা একটু পরে বলছি । আবার এমনও অনেকে রয়েছেন, যারা হয়ত Cox’s Bazar (কক্সবাজার) গিয়েছেন । কিন্তু সময় সুযোগের অভাবে Saint Martin(সেন্টমার্টিন) যাওয়া হয়নি এখনো । ভাবছেন হয়তো একসময় পরিবার-পরিজন বা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরে আসবেন Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এও। তাহলে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন আমার সম্পূর্ণ প্রবন্ধটি আর্টিকেলটি । কেননা এই আর্টিকেলটি পরে আপনি জানতে পারবেন Cox’s Bazar (কক্সবাজার) ও Saint Martin(সেন্টমার্টিন) ভ্রমণের সকল রকমের খুঁটিনাটি বিষয় ।
☆☆ Cox’s Bazar (কক্সবাজার) কীভাবে যাবেন ?
■ ঢাকা থেকে Cox’s Bazar (কক্সবাজার) :
>> ঢাকা থেকে আপনি যদি সরাসরি Cox’s Bazar (কক্সবাজার) যেতে চান তাহলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এবং সেখান থেকে Cox’s Bazar (কক্সবাজার) অথবা সরাসরি বাসে Cox’s Bazar (কক্সবাজার) যেতে পারবেন ।
>> ঢাকার মূল কেন্দ্র ফকিরাপুল, আরামবাগ, মতিঝিলসহ বেশ কয়েকটি স্থান আছে যেখান থেকে সরাসরি Cox’s Bazar (কক্সবাজার) এর উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায় । ১০-১২ ঘন্টার এই দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য ভাড়া বাসের সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী ৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে । এই রুটে যে সকল বাস চলাচল করে হলো :
▪ Sohag (সোহাগ),
▪ Greenline (গ্রীনলাইন),
▪ Hanif Travel (হানিফ পরিবহন),
▪ Eagle (ঈগল),
ও অন্যান্য পরিবহনের বিভিন্ন বাস চলাচল করে ।
>> আপনি চাইলে যেতে পারবেন ট্রেনে করেও । সেক্ষেত্রেও আপনাকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে যেসকল ট্রেন পাবেন তা হলো :
▪ Sonar Bangla (সোনার বাংলা),
▪ Subarna Express (সুবর্ন এক্সপ্রেস),
▪ Turna-Nishithi (তূর্ণা-নিশীথা),
▪ Mahanagar Provati/Godhuli) মহানগর প্রভাতী/গোধূলী,
▪ Chattagram Mail (চট্রগ্রাম মেইল),
ইত্যাদি ট্রেনে এ যাত্রা করতে হবে ।
ট্রেন থেকে চট্টগ্রাম নেমে সেখান থেকে নতুন ব্রিজ এলাকায় বা দামপাড়া বাস্ট স্ট্যান্ড এসে
▪ S.Alam (এস আলম),
▪ Hanif (হানিফ),
▪ Unique (ইউনিক),
ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের ও মানের বাস পাওয়া যাবে । বাস ভিন্নতায় Cox’s Bazar (কক্সবাজার) পর্যন্ত ভাড়া পরবে ২৮০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা ।
>> ঢাকা থেকে নিজেদের কিংবা ভাড়া করা Private Car (প্রাইভেট কার) অথবা Microbus (মাইক্রোবাস) নিয়েও যেতে পারবেন Cox’s Bazar (কক্সবাজার) । সেক্ষেত্রে আপনার লাগতে পারে ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা ২ দিন ২ রাতের জন্য । তবে এই ভাড়াটা আপনার ভাড়া করা গাড়ীর সাইজ এবং আপনি দড়াদড়িতে ঠিক কতটা দক্ষ তার উপর নির্ভর করবে ।
>> এছাড়াও ঢাকা থেকে বিমানে সরাসরি Cox’s Bazar (কক্সবাজার) যেতে পারবেন ।
▪ Bangladesh Airlines (বাংলাদেশ বিমান),
▪ Novoair (নভোএয়ার),
▪ US Bangla (ইউএস বাংলা),
সহ বেশ কিছু বিমান ঢাকা থেকে সরাসরি Cox’s Bazar (কক্সবাজার) ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে । তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে খরচের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে আপনাকে ।
>> যদি আপনি সরাসরি ঢাকা থেকে Saint Martin(সেন্টমার্টিন) যেতে চান তাহলে, আপনাকে প্রথমে ঢাকা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত আসতে হবে । তারপর সেখান থেকে জাহাজ কিংবা ট্রলারে করে আপনি Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এ রওনা হতে পারবেন ।
>> ঢাকার মতিঝিলের ফকিরাপুল এবং সায়েদাবাদ থেকে টেকনাফের অনেক গুলো বাস পাবেন । যেতে সময় লাগবে প্রায় ১১ ঘন্টা থেকে ১২ ঘণ্টা এবং বাসের ভাড়া পরবে বাসের সুযোগ সুবিধা ভেদে ৯০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত ।
>> টেকনাফ পৌঁছে আপনাকে যেতে হবে জেটি ঘাট নামক স্থানে । টেকনাফ থেকে Saint Martin(সেন্টমার্টিন) দূরত্ব প্রায় ৯ কিলোমিটার । November (নভেম্বর) থেকে March (মার্চ) মাস পর্যন্ত টেকনাফ থেকে প্রতিদিন সকালে অনেকগুলো উন্নতমানের জাহাজ ছেড়ে যায় Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এর উদ্দেশ্যে । জাহাজ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো :
▪ কেয়ারি সিন্দাবাদ,
▪ কেয়ারি ক্রুজ,
▪ আটলান্টা,
▪ এম.ভি. ফারহান ইত্যাদি ।
এসব জাহাজে যেতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘন্টা থেকে ২.৩০ ঘণ্টা এবং আসা-যাওয়া মিলিয়ে ভাড়া পরবে জাহাজের শ্রেণীভেদে ৬০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত । পুরো পথ জুড়ে আপনি দেখা মিলবে নীল সাগর, সুবিশাল পাহাড় আর অসংখ্য গাঙচিল । প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে ১০ টার মাঝে এসব জাহাজ টেকনাফ থেকে Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ।
>> Cox’s Bazar (কক্সবাজার) থেকে Saint Martin(সেন্টমার্টিন) যেতে হলে আপনাকে প্রথমে বাস বা সিএনজি অথবা জিপে করে টেকনাফ আসতে হবে । ২ থেকে ২.৩০ ঘণ্টার এই রাস্তায় আপনাকে ভাড়া গুনতে হবে পরিবহনভেদে ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা । তবে সেজন্য আপনাকে অবশ্যই ভোর ৬ টার মধ্যে Cox’s Bazar (কক্সবাজার) থেকে রওনা দিতে হবে । টেকনাফে পৌঁছে আপনাকে উপরে উল্লেখিত রাস্তা বা রুটে আপনাকে Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এ পথ পাড়ি দিতে হবে ।
☆☆ কোন সময়ে বা কখন যাবেন ?
■ কক্সবাজার বা Saint Martin(সেন্টমার্টিন) ভ্রমনের জন্য মূলত বেশিরভাগ মানুষই শীতকালটাই বেঁছে নেয় । এর পেছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে বটে । এর কারণ, প্রথমত শীতকালে সমুদ্র খুব বেশি উত্তাল থাকে না । তাই সমুদ্রের অনেকটা ভিতরেই পৌঁছানো যায় এসময় । এছাড়া Saint Martin (সেন্টমার্টিন) এ যেসকল বিশেষ জাহাজ চলাচল করে সেগুলিও মূলত শীতকালেই চলাচল করে থাকে । অন্যান্য সময়ে যেতে হলে সেখান থেকে ট্রলার ভাড়া করে যেতে হয় । তবে যারা ভ্রমণপিয়াসী বা যাদের ভ্রমণ করার শখ তাদের জন্য Cox’s Bazar (কক্সবাজার) বা Saint Martin(সেন্টমার্টিন) যাওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই । প্রকৃতির রূপ বদলের সাথে সাগরের রুপও অনেক বদলে যায় । আর সেই বদলে যাওয়া রুপ দেখতে অনেকেই ছুটে চলে আসেন এখানে । তাছাড়া এসব Off-Season (অফ-সিজনে) April - October (এপ্রিল থেকে অক্টোবর) মাসে হোটেল-মোটেলে পাওয়া যায় বিশেষ বিশেষ অফার ও ছাড় ।
☆☆ সেখানে যেয়ে কি কি দেখবেন ?
■ Cox’s Bazar (কক্সবাজার) :
কে না সমুদ্র দেখতে ভালোবাসে । আর সেটা যদি হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত তবে তো কোন কথাই নেই । সামনে বিশাল সমুদ্র, বালুর নরম বিছানা, ঝাউবনের ঝিরঝিরি বাতাস । Cox’s Bazar (কক্সবাজার) গেলে আপনার সকালে-বিকেলে মন চাইবে সমুদ্রতীরে ঘুরে বেড়াতে । কারণ এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষন হলো এখানকার শোঁ শোঁ গর্জন ও নীল জলরাশির মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকত । এই অপার সৌন্দর্যে আপনি হারিয়ে যেতে পারেন দূর কল্পনায় । এবার চলুন জেনে আসা যাক, Cox’s Bazar (কক্সবাজার) গেলে আপনি কি কি অবশ্যই দেখে আসবেন :
■ হিমছড়ি (Himchori) : সমুদ্র সৈকত থেকে যাওয়ার পথে প্রায় ১২ কিলোমিটার সামনে গেলেই আপনি পেয়ে যাবে দর্শনীয় পর্যটন স্থান হিমছড়ি (Himchori)। অপরুপ ঝর্ণা ধারা আর উঁচু সবুজে ঘেরা পাহাড় এখানকার পর্যটকদের মূল আকর্ষণ । একদিকে বিশাল বিশাল আকারের অন্যদিকে নীল সমুদ্র দেখে আপনার হৃদয় ও মন বিস্ময়ে ভরে উঠবে । এখানে থাকা অনেকগুলো রিসোর্ট থেকেই আপনি উপভোগ করতে পারবেন সাগরের গর্জন ও তার উত্তাল ঢেউ ।
■ মহেশখালী (Moheshkhali) : Cox’s Bazar (কক্সবাজার) থেকে নৌপথে মহেশখালী (Moheshkhali) এর দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার । স্পীডবোট বা ট্রলারে করে আপনি মহেশখালী (Moheshkhali) যেতে পারবেন । সেখান থেকে সময় লাগবে প্রায় ১ ঘন্টা থেকে ৪৫ মিনিট । মহেশখালী (Moheshkhali) মূলত এখানকার শুঁটকী উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরনের জন্য সারা দেশব্যাপী সুখ্যাত । অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা এই মহেশখালী (Moheshkhali) তে রয়েছে অনেকগুলো পাহাড় । যেখান থেকে আপনি উপভোগ করতে পারবেন পুরো দ্বীপের সৌন্দর্য । এখানেই আপনি দেখা পাবেন সৈকতজুড়ে দৌড়ে বেড়ানো শত শত লাল কাকঁড়ার ।
■ রামু বৌদ্ধ বিহার ( Ramu Buddhist Bihar) : রামু বৌদ্ধ বিহার ( Ramu Buddhist Bihar) হলো Cox’s Bazar (কক্সবাজার) এর নিকটতম উপজেলা রামুতে অবস্থিত । এই রামু বৌদ্ধ বিহার ( Ramu Buddhist Bihar) এ সর্বমোট ৩৫ টি মূর্তি আছে । যার মধ্যে গৌতম বুদ্ধের ১০০ ফুট লম্বা সিংহশয্যা মূর্তি আপনাকে অবাক করবে দিবে । এই রামু মন্দিরের পাশেই আরো অনেক ছোট বড় বৌদ্ধ মন্দির রয়েছে । যার মাঝে শ্রীকুল পুরাতন বৌদ্ধ বিহার, লামাড় পাড়া বৌদ্ধ বিহার, রামু সীমা বিহার, সাদাচিং, লালচিং উল্লেখযোগ্য । এছাড়াও আরেকটি আকর্ষণীয় স্থান হলো রামুর রাবার বাগান ।
■ ডুলাহাজরা সাফারী পার্ক (Dulahazra Safari Park) : ডুলাহাজরা সাফারী পার্ক (Dulahazra Safari Park) কে বাংলাদেশের প্রথম সাফারী পার্ক বলা হয় । যার আয়তন প্রায় ২,২২৪ একর । এই পার্কটি পাহাড়ি অঞ্চলের উপর গড়ে ওঠার জন্য এখানে ভ্রমণ করে আপনি যেতে পারবেন প্রকৃতির অন্য এক অনাবিল সুন্দর দুনিয়ায় । সেখানে রয়েছে অনেক ধরনের পাখ-পাখালী ও বন্যপ্রাণী । যার মধ্যে বেশকিছু প্রজাতি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে । পার্কটি Cox’s Bazar (কক্সবাজার) শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত । স্থানীয় অধিবাসীদের আনন্দ ও বিনোদনের জন্য ডুলাহাজরা সাফারী পার্ক (Dulahazra Safari Park) বর্তমানে একটি বেশ আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে ।
■ রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড (Rediant Fish World) : টিভি পর্দায় কিংবা ইন্টারনেটে আপনারা হয়ত দেখেছেন, অনেক বড় আকারের একুরিয়াম । যার মধ্য দিয়ে পর্যটকরা হেঁটে যায় এবং নানা রঙের ছোট বড় মাছ ঘিরে থাকে । তাদের চারপাশের ঘেরা কাঁচের দেয়ালে দিয়ে । এই নিদর্শন দেখতে এখন আর আপনাকে দূর বিদেশে পাড়ি দিতে হবে না । কেননা Cox’s Bazar (কক্সবাজার) ঝাউতলা প্রধান সড়কের পাশেই গড়ে তোলা উঠেছে এরকম একটি বিশাল বড় একুরিয়াম । যার নাম রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড (Rediant Fish World)। Cox’s Bazar (কক্সবাজার) শহর থেকে Easy Bike, Auto Rickshaw বা CNG নিয়ে মাত্র ১৫ মিনিট থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে সেখানে চলে যেতে পারবেন । রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড (Rediant Fish World) এ প্রবেশের টিকিট মূল্য ৩০০ টাকা । তবে অনেক সময় তারা Discount ও বিভিন্ন রকমের Offer দিয়ে থাকে ।
এছাড়া আর যা যা দেখতে পারেনঃ
● নাইক্ষ্যংছড়া লেক ও ঝুলন্ত ব্রীজ
● কলাতলী বিচ
● মেরিন ড্রাইভ
● বৌদ্ধ মনাস্ট্রী বা মঠ আশ্রম
■ সেন্টমার্টিন (Saint Martin) : নৈসর্গিক অপূর্ব সৌন্দর্যের এক আঁধার এই Saint Martin (সেন্টমার্টিন)। এটিই বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ যা মূল ভূখন্ড থেকে সর্ব দক্ষিণে এবং Cox’s Bazar (কক্সবাজার) জেলা শহর থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । এই ক্ষুদ্র দ্বীপটির আয়তন প্রায় ১৭ বর্গ কিলোমিটারের । এখানকার স্থানীয় লোকজন Saint Martin (সেন্টমার্টিন) কে নারিকেল জিঞ্জিরাও বলে থাকে । প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত এই দ্বীপটি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্থান হিসাবে স্থান করে নিয়েছে দেশ ও বিদেশের শত শত পর্যটকদের কাছে । সারি সারি নারিকেল গাছ ও নীল আকাশের সাথে সমুদ্রের নীল জলরাশি এ দ্বীপকে করেছে অনন্য সুন্দর । চলুন জেনে নেয়া যাক, কীভাবে আপনি উপভোগ করবেন এই Saint Martin(সেন্টমার্টিন) ভ্রমণকে ।
■ ছেড়া দ্বীপ (Chera Dip) : যারা এক দিনের জন্য ট্রিপ দিতে যাবেন Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এ তাদের হয়তো আফসোস হতে পারে ছেড়া দ্বীপ (Chera Dip) যদি না দেখে আসেন । তাই আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে অন্তত একদিন Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এ অবস্থান করা । এতে যেমন আপনি সম্পূর্ণ দ্বীপ ঘুরে দেখতে পারবেন, ঠিক তেমনই চলে যেতে পারবেন কাছেরই দ্বীপ, ছেড়া দ্বীপ (Chera Dip) এ । ছেড়া দ্বীপ (Chera Dip) এর প্রকৃতির অকৃত্রিম সৌন্দর্যের আয়োজন আপনাকে মোহিত করে তুলবে ।
■ Cox’s Bazar (কক্সবাজার) : Cox’s Bazar (কক্সবাজার) এ থাকার জন্য Normal Hotel থেকে শুরু করে Five Star ক্যাটাগরির নানা ধরনের হোটেল পাবেন । বেশিরভাগ হোটেলই সমুদ্র সৈকতের খুবই কাছে এবং মানসম্মত । ইনানী বিচের (Inani Bitch) এর আশপাশের এলাকাতেও গড়ে উঠেছে থাকার জন্য অনেকগুলো হোটেল । সিজন অনুযায়ী অর্থাৎ পিক সিজন ও অফ-পিক সিজন অনুযায়ি হোটেল গুলোর রুমের ভাড়ার মধ্যে কম বেশি হয়ে থাকে । প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময়কে পিক এবং মে মাস থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময়কে অফ-পিক টাইম হিসাবে ধরা হয় । অফ-পিক সিজনে হোটেলের ধরন ও ক্লাস ভেদে সেগুলোর রুম ভাড়া ২৫%-৫০% পর্যন্ত Discount পাওয়া যায় । এজাড়া সমুদ্র থেকে একটু দূরত্বে অনেকগুলো সাধারণ মানের হোটেলও আছে ।
আপনাদের সুবিধার জন্য Cox’s Bazar (কক্সবাজার) এর কিছু বিশেষ হোটেল ও তার যোগাযোগ নম্বর গুলো নিচে লিখে দেয়া হলো :
● সীগাল হোটেল লিমিটেড (Seagal Hotel Limited)
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৬৬৬৬৬৫৩০.
● হোটেল দ্য কক্স টুডে (Hotel The Cox's Today)
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৫৫৫৯৮৪৫০.
● হোয়াইট অর্কিড (White Orchid)
যোগাযোগের নম্বর : ০১৮২৫৯২৩৯৮৯.
● সায়মন বিচ রিসোর্ট (Saimon Bitch Resort)
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৫৫৬৯১৯১৭.
● ওশান প্যারাডাইস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট (Oshan Paradise Hotel And Resort)
যোগাযোগের নম্বর : ০১৯৩৮৮৪৬৭৬৩-৭.
● লং বিচ হোটেল (Long Bitch Hotel
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৫৫৬৬০০৫১.
● হোটেল সী ক্রাউন (Hotel Sea Crawn
যোগাযোগের নম্বর : ০১৮১৭০৮৯৪২০.
● এ্যালবাট্রস রিসোর্ট (Alberts Resort
যোগাযোগের নম্বর : ০১৮১৮৫৪০১৭৭.
● হোটেল রয়াল রিগ্যাল পেলেস (Hotel Royal Regal Palace)
যোগাযোগের নম্বর : ০১৯৭৭৯৩৬৬২৩.
● হোটেল প্রাইম পার্ক (Hotel Prime Park)
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৭৫৬০৯৯১৫.
● হোটেল ইউনি রিসোর্ট (Hotel Uni Resort )
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭১৩১৬০১৬৭.
■ সেন্টমার্টিন (Saint Martin) : থাকার জন্য Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এ রয়েছে অনেকগুলো উন্নত ও মনসম্মত হোটেল এবং রিসোর্ট । এগুলোর অধিকাংশই সমুদ্র বিচের পশ্চিমাংশে অবস্থিত । আপনি চাইলে সেখান থেকেই সাগর দেখতে পারবেন । কিছু হোটেল ও রিসোর্টের নাম এবং যোগাযোগের জন্য নাম্বার নিচে দেয়া হলো :
● ব্লু মেরিন রিসোর্ট (Blue Marin Resort) : সৈকত থেকে পশ্চিম বিচের দিকে, জেটির পাশে ।
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭১৩৩৯৯০০১।
ভাড়া : ১৫০০ টাকা - ৫০০০ টাকা ।
● কোরাল ভিউ রিসোর্ট (Coral View Resort) :
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭১৩১৯০০১৩ ।
● প্রাসাদ প্যারাডাইস রিসোর্ট (Prasad Paradise Resort) : সমুদ্র থেকে উত্তর বিচের দিকে ।
যোগাযোগের নম্বর :০১৭৯৬৮৮০২০৭ ।
ভাড়া : ১৫০০ টাকা - ৪০০০ টাকা ।
● অবকাশ পর্যটন লিমিটেড (Obokash Porjoton Limited) :
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৬৭৮৯৬৩৪ ।
ভাড়া ১৫০০ টাকা - ৩০০০ টাকা ।
● বাগস বারী রিসোর্ট (Baggs Bari Resort) :
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৮৭৭০২২২০ ।
ভাড়া ১০০০ টাকা - ২০০০ টাকা ।
● নীল দিগন্তে রিসোর্ট (Nil Digante Resort) :
যোগাযোগের নম্বর : ০১৭৩০০৫১০০৪ ।
ভাড়া ২০০০ টাকা - ৪০০০ টাকা ।
● পান্না রিসোর্ট (Panna Resort) : সৈকত থেকে পশ্চিম বিচের দিকে ।
যোগাযোগের নম্বর : ০১৮১৬১৭২৬১৫ ।
ভাড়া ১৫০০ টাকা - ২৫০০ টাকা ।
● মিউজিক ইকো রিসোর্ট (Music Eco Resort) : সৈকতের ঠিক দক্ষিন প্রান্তে রয়েছে ।
যোগাযোগের নম্বর : ০১৬১৩৩৩৯৬৯৬ ।
ভাড়া ২৫০০ টাকা - ৪০০০ টাকা ।
● হুমায়ূন আহমেদের সমুদ্র বিলাস (Somudra Bilas - Humayun Ahmed) :
যোগাযোগের নম্বর : ০১৯১১৯২০৬৬৬ ।
● ড্রীম নাইট রিসোর্ট (Dream Night Resort) : সৈকতের পশ্চিম বিচের দিকে ।
যোগাযোগের নম্বর : ০১৮১২১৫৫০৫০ ।
ভাড়া ১৫০০ টাকা - ২৫০০ টাকা ।
☆☆ সেখানে যেখাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা :
Cox’s Bazar (কক্সবাজার) ও Saint Martin(সেন্টমার্টিন) উভয় স্থানেই সেখানকার আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টগুলোতে নিজস্ব রেস্টুরেন্ট রয়েছে । তাই খাওয়ার জন্য তেমন একটা দুঃশ্চিন্তা না করলেও চলবে । সেখানে আপনি রেগুলার খাবারের আইটেমের পাশাপাশি পাবেন বিভিন্ন ধরণের সামুদ্রিক মাছ । হোটেলের মানের উপর আপনার খাবারের মূল্য নির্ভর করে । তবে আপনি যদি প্রতি বেলায় মোটামুটি ভাবে খেতে চান তবে সেক্ষেত্রে, জনপ্রতি ১৫০ টাকা -২০০ টাকা তো খরচ হবেই আপনার ।
এই ধরণের ভ্রমণে সাধারণত খরচ অনেকটাই নির্ভর করে আপনার উপর । আপনি ঠিক কীভাবে যাবেন ? কোথায় থাকবেন ? কত দিন থাকবেন ? কোথায় কোথায় যাবেন ? এবং কি খাবেন ? তার উপর ।
তার পরেও আপনাদের সুবিধার জন্য আমাদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী আমরা খরচের একটা সামান্য ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করলাম ।
■ ঢাকা-Cox’s Bazar(কক্সবাজার)-ঢাকা : আপনি যদি শুধু Cox’s Bazar(কক্সবাজার) ভ্রমণ করতে চান । তবে আপনি ২ রাত ২ দিনের জন্য একটি স্বল্পমেয়াদি ভ্রমনে যেতে পারেন । আপনি যদি Non-AC বাসে যান এবং Medium Category Hotel এ থাকেন তাহলে আপনার সব মিলিয়ে আসা যাওয়া ও থাকা বাবদ ২০০০ টাকা - ২৫০০ টাকা খরচ হবে । আর আপনার খাওয়া-দাওয়া অনেকটাই আপনার নিজের উপর নির্ভর করে । তাই কম করেও যদি আপনি খেতে চান তবুও প্রতি বেলায় আপনার ১৫০ টাকা লাগবে খেতে । এছাড়াও আপনার বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি আর টুকটাক কেনা-কাটায় আপনার আরো ১০০০ টাকা - ১২০০ টাকা খরচ হয়ে যাবে । সব মিলিয়ে জন প্রতি এই ভ্রমণে খরচ প্রায় ৪০০০ টাকা থেকে ৪৫০০ টাকা করে পরবে । এক্ষেত্রে আপনি যদি AC বাসে করে আসেন এবং একটু সুন্দর ও ভালো মানের হোটেলে থাকতে চান । তবে এই খরচ বেড়ে যাবে । তখন খরচ পরবে প্রায় ৫০০০ টাকা থেকে ৫৫০০ টাকার মধ্যে ।
■ ঢাকা-Cox’s Bazar(কক্সবাজার)-Saint Martin(সেন্টমার্টিন)-ঢাকা : এক্ষেত্রে উপরের সব খরচগুলো প্রায় একই থাকবে । তবে সাথে আরো যুক্ত হবে সেখান থেকে টেকনাফ যাওয়ার গাড়ি ভাড়া, জাহাজ ভাড়া ও অন্যান্য কিছু পরিবহন খরচ । সেজন্য আপনি যদি একটু মিতব্যায়ি হতে পারেন তবে আপনি ৬০০০ টাকা - ৬৫০০ টাকার মধ্যে Saint Martin(সেন্টমার্টিন) ও ঘুরে আসতে পারবেন । তবে আপনি যদি বিলাসবহুল ভ্রমণ চান তাহলে আপনাকে গুনতে হবে ৭০০০ টাকা - ৭৫০০ টাকা ।
☆☆ সতর্কতা :
● প্রবাল কেনা/বেচা, উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ও আইনত দন্ডনীয় অপরাধ । তাই ঝিনুক, শামুক, প্রবাল না ক্রয় করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে ।
● সমুদ্রের কাছিম হলো প্রায় বিলুপ্ত প্রাণী । তাই এসব প্রাণী আমাদের সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরী । সমুদ্র সৈকত হলো সামুদ্রিক কাছিমেদের ডিম পাড়ার জায়গা । আর শীতকালই হলো এদের ডিম পাড়ার সময় । রাত্রে সৈকতের আশপাশে হৈচৈ করা ও আলো জ্বালানো সম্পূর্ণ নিষেধ । আন্তর্জাতিক প্রটোকল ও বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কাছিম ধরা, মারা, ডিম সংগ্রহ ও বিক্রয় করা সম্পূর্ণ দন্ডনীয় অপরাধ ।
● বীচে বা সমুদ্র সৈকতে হাঁটার সময় আপনাকে অবশ্যই কাঁকড়ার বাসস্থানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে । যাতে করে আপনার হাঁটার জন্য তাদের বাসস্থানের কোন ক্ষতি না হয় ।
● কেয়া গাছের কেয়া ফল ছেঁড়া যাবে না ।
● সমুদ্র অঞ্চল প্রাকৃতিক ঝুকিপূর্ণ এলাকা । আর তাই কাঁচ ও প্লাস্টিক সহ যে জিনিসপত্র মাটিতে সহজে পঁচে না । সেগুলো যত্রতত্র ফেলবেন না ।
■ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্তৃক Saint Martin(সেন্টমার্টিন) এলাকার জন্য একটি সতর্কীকরণ নির্দেশনা নিম্নরূপ :
● সমুদ্র নামার আগে জোয়ার ভাটার খবরাখবর ও সময় জেনে নিন ।
● এক হাঁটু পানির নিচে বা কোমর সমান পানিতে না নামাই ভালো ।
● উত্তেজনার বসে পানিতে নেমে সৈকতের তীর হতে দূরে চলে যাবেন না ।
● ছোট ছোট বাচ্চাদের প্রাপ্ত বয়স্কদের অনুপস্থিতি ছাড়া পানিতে নামা নিষেধ ।
● সাঁতার কাটতে না জানলে পানিতে নামবেন না ।
● একা একা অবশ্যই পানিতে নামবেন না ।
● সমুদ্রে যেকোন নৌ যান চলাচলের সময় অবশ্যই লাইফ জাকেট পরিধান করুন ।
● সব সময় মনে রাখবেন, আপনার জীবনের নিরাপত্তা কেবল আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে ।
আর্টিকেল লেখক : Rahim Badshah
♡ধন্যবাদ♡
-- নোট :--
® Rahim Badshah™
এই লেখার সমস্ত স্বত্বাধিকার © "রহিম বাদশা" এর সংরক্ষিত। এই লেখার কোন অংশই লেখকের অনুমতি ব্যতীত ফটোকপি, রেকর্ডিং, বা অন্যান্য বৈদ্যুতিক বা যান্ত্রিক পদ্ধতি সহ, কোনও আকারে বা কোনও উপায়ে পুনরুতপাদন, বিতরণ বা প্রেরণ করা যাবে না । তবে শেয়ার এবং লেখকের ক্রেডিট দেয়ার শর্তে অনুমতি দেয়া হলো।
অনুমতি অনুরোধের জন্য, লেখকের কাছে চিঠি লিখুন, নীচের ঠিকানায় -
"মেইল করুন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করুন"
No comments