দেয়াল
দেয়াল
----রহিম বাদশা
আমার বেশ পছন্দের একটি দেয়াল আছে,
পোড়া ছাইয়ে হাসনাহেনা ফুলের রস মেখে,
করোতোয়ার একটু জল মিশিয়ে,
দেয়ালটি জল রঙে রাঙিয়ে ছিলাম ।
জল রঙ বেশ লাগে আমার,
সাদা আর কালো গুলোকে
মিশিয়ে এক করে দেয় ।
সেখানে উটকো কোন রঙের
এদিক সেদিক ছড়াছড়ি, কাড়াকাড়ি
কিংবা মারামারি কোনটাই নেই ।
বেশ যত্ন নিয়ে দেয়ালটা গড়েছিলাম,
একটা একটা করে শ্বেত পাথরে গাঁথাই করে,
বেলে দো-আশ মাটির কাঁদা দিয়ে,
যেন সহজে ভেঙে না যায় ।
এতো ভালোবাসা ছিল সেখানে,
ততোটা বোধহয় শিকড়ের জন্যও বৃক্ষের নেই।
দেয়ালটায় আবার একটা আলমিরাও ছিল,
আমার সকল আনন্দ, খুশি আর স্বপ্ন গুলো
আমি সেখানে জমিয়ে রাখতাম ।
ও হ্যাঁ, সেটা আবার তালাবদ্ধ করেও রাখতাম,
যেন আবার চুরি কিংবা
বৃষ্টির চুইয়ে পড়া পানি ভিজিয়ে না দেয় ।
প্রতিবার যখন কালবৈশাখী ঝড় উড়ে আসতো,
আমি তখন হয়ে যেতাম এক ম্যানগ্রোভ বন ।
নিজের সর্বস্ব দিয়ে সমস্ত শক্তি দিয়ে
আগলে রাখতাম আমার সে দেয়ালটা ।
আবার সেবারে যখন প্রচুর বৃষ্টি হলো,
ঢাকায় সে কি পানি....
নিচুতলার মানুষ গুলো নাকি ঘুম থেকে উঠে,
বিছানায় বসেই মুখ ধূয়ে নিত-বাথরুমে যাবার যো ছিল না,
তখনও আমি আমার দু হাঁটুর উপর দেয়ালটা তুলে রেখেছিলাম,
যেন সে পানিতে দেয়ালটি খয়ে না যায় ।
কিন্তু আলমিরাতে রাখা স্বপ্নগুলো এত বেশি হয়েছিল,
কখন যে দৃষ্টির অলক্ষ্যে চিড় ধরে গেল,
বুঝতেই পারি নি ।
চিড় থেকে শুরু ফাটল,
যেন এক শতবর্ষী বৃক্ষের বুক জুড়ে গভীর কোটর ।
সে কোটরে আবার দেখা দিল
বিধ্বংসী এক পোকা ,
যা তীলে তীলে খেতে থাকলো ভালোবাসার সে দেয়াল,
ক্রমেই খসে পড়তে লাগলো সেই জল রঙ গুলি,
যেন নির্জীব হয়ে ধ্বংস হতে লাগলো ।
আজ আমি সেই ধ্বংসাবশেষের নিচে,
আবারো ভালোবাসার সে দেয়াল গড়ার
তীব্র এক আশায় বেঁচে আছি আজো ।
22 May 2020 at 03:00 AM
-- নোট :--
® Rahim Badshah™
এই লেখার সমস্ত স্বত্বাধিকার © "রহিম বাদশা" এর সংরক্ষিত। এই লেখার কোন অংশই লেখকের অনুমতি ব্যতীত ফটোকপি, রেকর্ডিং, বা অন্যান্য বৈদ্যুতিক বা যান্ত্রিক পদ্ধতি সহ, কোনও আকারে বা কোনও উপায়ে পুনরুতপাদন, বিতরণ বা প্রেরণ করা যাবে না । তবে শেয়ার এবং লেখকের ক্রেডিট দেয়ার শর্তে অনুমতি দেয়া হলো।
অনুমতি অনুরোধের জন্য, লেখকের কাছে চিঠি লিখুন, নীচের ঠিকানায় -
"মেইল করুন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করুন"
® Rahim Badshah™
এই লেখার সমস্ত স্বত্বাধিকার © "রহিম বাদশা" এর সংরক্ষিত। এই লেখার কোন অংশই লেখকের অনুমতি ব্যতীত ফটোকপি, রেকর্ডিং, বা অন্যান্য বৈদ্যুতিক বা যান্ত্রিক পদ্ধতি সহ, কোনও আকারে বা কোনও উপায়ে পুনরুতপাদন, বিতরণ বা প্রেরণ করা যাবে না । তবে শেয়ার এবং লেখকের ক্রেডিট দেয়ার শর্তে অনুমতি দেয়া হলো।
অনুমতি অনুরোধের জন্য, লেখকের কাছে চিঠি লিখুন, নীচের ঠিকানায় -
"মেইল করুন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করুন"
No comments